‘আগামী এক বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে ব্যবসা করতে পারলে প্রথম বিনিয়োগ থেকেই সব দেনা পরিশোধ করা সম্ভব’-এমন মন্তব্য করে ‘আগের অর্ডার করা পণ্য ও রিফান্ডের অর্থ ফেরত’ দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন জামিনে মুক্ত আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই কথা দেন তিনি।
তিনি বলেন, আগামী এক বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে ব্যবসা করতে পারলে প্রথম বিনিয়োগ থেকেই সব দেনা পরিশোধ করা সম্ভব। বাংলাদেশের ই-কমার্স সাইজ অনুযায়ী ইভ্যালি মাল্টিবিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ তোলার সক্ষমতা রাখে।
পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্ব দেওয়া শামীমা নাসরিন আরো বলেছেন, দেনা পরিশোধ করতে দরকার বিনিয়োগ। বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। দেশে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিদেশি বিনিয়োগ আছে। আমরাও চেয়েছিলাম বিদেশি বিনিয়োগ আনতে। তারপরও নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছর ব্যবসা করতে পারলে আমাদের সব দেনা পরিশোধ করতে পারবো।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি ইভ্যালির ৪৫ লাখ ক্রেতা ও ৩০ হাজার বিক্রেতা দৈনন্দিন প্রয়োজনে নিয়মিত কেনাকাটা করলে সহজেই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসা সম্ভব। অনেকেই হয়ত অবগত আছেন, আগে ইভ্যালিতে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আমাদের সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ তৈরি হলে খুব সহজেই বিনিয়োগ আসা সম্ভব হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
শামীমা বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল সঠিক সময়ে বিনিয়োগ না বাড়ানো এবং গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকারীদের অর্থ বকেয়া রেখে ব্যবসা গড়ে তোলা। কিন্তু সেখানে কোনো প্রতারণা ছিল না। আপনারা বাড়ি নির্মাণের জন্য অগ্রিম অর্থ দেন। ডেভেলপার যদি সময়মতো বাড়ি না দেয় তাহলে এটা অন্যায়। কিন্তু এই ব্যবসাকে অন্যায্য বলা ঠিক নয়। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ভবিষ্যৎ লাভ দিয়ে প্রথম দিকের দায় পরিশোধ করা। আমরা মনে করি এই পরিকল্পনায় আমাদের ভুল ছিল। এই যাত্রায় আমরা প্রথম দিন থেকেই লাভে পণ্য বিক্রি করব।’
শামীমা নাসরিন আরও বলেন, ‘আগের অর্ডার করা পণ্য ও রিফান্ডের অর্থ ফেরত দেব। এজন্য আমাদের প্রথমে সার্ভার খোলা জরুরি। সার্ভারের আইডি ও কোড একটি জটিল নম্বর। এটি মনে রাখা বা মুখস্ত করে রাখার বিষয় নয়। এ আইডিটি হারিয়ে যাওয়ায় এখন জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এ বিষয়ে অ্যামাজনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যদি আমাদের সাবেক এমডি রাসেল বাইরে থাকতেন তাহলে বিষয়টি সহজ হতো। কিন্তু বর্তমানে তিনি কারাগারে থাকায় পুরো প্রক্রিয়াটি জটিল রূপ ধারণ করেছে। তবে আশা করা হচ্ছে অচিরেই এটি সমাধান হবে।’
মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়ে ই-ভ্যালি চেয়ারম্যান বলেন, অডিট রিপোর্টের আগেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক কথা বলেছেন গণমাধ্যমে। একবার তিনি বলেছেন ইভ্যালির চার হাজার ৮০০ কোটি টাকার হসিদ নেই। আবার বলেছেন ৪৭ হাজার কোটি আছে। তার এই বারবার ভুলের মাধ্যমে প্রমাণ হয় তিনি হয়তো সঠিক তথ্য বুঝতে পারেননি। না হয় ইচ্ছা করে ইভ্যালিকে নিয়ে এসব কথা বলছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা অনেকবার দুবাই গিয়েছি। অথচ আমরা দুবার মাত্র দুবাই গিয়েছি। তাও ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য।
ইভ্যালির দেনা সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারের আগে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছিলাম আমাদের দেনা আনুমানিক ৪০০ কোটি টাকা। সেজন্য ছয় মাস সময় চেয়েছিলাম। আমরা সেই সময় পাইনি।