১৪-১৬ নভেম্বর ২০২২ ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষানেতাদের অন্যতম শীর্ষ সংস্থা এসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিজ অফ এশিয়া প্যাসিফিক (এইউএপি) এর ১৫তম সাধারন সম্মেলনের আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে । রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু উৎসব হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ড্যা
ফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্বাগতিকতায় ” চতুর্থ শিল্পবিপ্লব যুগে তথ্যপ্রযুক্তি এবং গুনগত শিক্ষার মধ্যে সমন্বয়” প্রতিপাদ্য নিয়ে এইউএপি’র এ সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের শিক্ষানেতাদের সর্ববৃহৎ সমাগম ঘটেছে ঢাকায়। সম্মেলনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ বিশ্বের ১০ টি দেশের ৩২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, উপাচার্য, উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অফিসারবৃন্দ ও শিক্ষাবিদরাসহ ৬০ এর বেশী প্রতিনধি অংশগ্রহণ করেন।
অডনষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েসন অব ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস (আইইউএপি’র সভাপতি ড. ফার্নান্দো লিয়েন গ্রেসিয়া । বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিজ অফ এশিয়া প্যাসিফিক (এইউএপি) এর সভাপতি ড. পিটার পি লওরেল, ভারতের কলিঙ্গ ইন্সটিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্স এর প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতীয় লোক সভার সদস্য প্রফেসর ড. অচূৎ সামন্ত, এসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিজ অফ এশিয়া প্যাসিফিক (এইউএপি) এর প্রথম সহ-সভাপতি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. মোঃ সবুর খান, সোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিজ অফ এশিয়া প্যাসিফিক (এইউএপি) এর মহাসচিব প্রফেসর ড. রিকার্ডো পি পামা। অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, এমপি ভার্চূয়ালী ভিডিও বার্তা প্রদান করেন।
এইউএপি ১৯৯৫ সালে এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের ৫১ বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য করে যাত্রা শুরু করে এবং সময়ের বিবর্তনে এটির সদস্য সংখ্যা ও কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়ে সারা বিশ্বব্যাপি এর প্রসার ঘটে। করোনা মহামারির পর বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্বাগতিকতায় এসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিজ অফ এশিয়া প্যাসিফিক (এইউএপি) আগামী ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত সংস্থাটির ১৫তম সাধারণ অধিবেশনের জন্য ঢাকায় সর্ব প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ২০২০ সালে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ১৪তম সাধারণ অধিবেশনের পর এই বছর ঢাকায় শারীরিক উপস্থিতির ভিত্তিতে এতো বড় সম্মেলনের জন্য এটি ঐতিহাসিকভাবে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে।
এইউএপি-এর লক্ষ্য হলো সংস্থাটির সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে আন্তসম্পর্ক ও সহযোগিতার সুহৃদ সম্পর্ক বৃদ্ধি করে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সর্বোপরি উন্নয়নের জন্য একটি আধুনিক ও কার্যকরী মঞ্চ তৈরি করা। এই লক্ষ্যে এটি একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এইউএপি-এর প্রতিষ্ঠা দেশ থাইল্যান্ডের সুরনারি ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি-এর চেয়ারম্যান ড. উইচিট শ্রীসানের নেতৃত্বে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আরও ২০জন বিশিষ্ট শিক্ষানেতার সমন্বয়ে এর উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হয়। সভাপতি হিসেবে ফিলিপাইনের ড. পিটার পি লরেলের নেতৃত্বে ১০জন সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটি গঠন হয়, যেখানে বাংলাদেশের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এই কমিটির প্রথম সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এইউএপি- তিন সদস্যের সচিবালয় ও ৫টি সাব কমিটি গঠনের মাধ্যমে এর কার্যক্রম পরিচালনা করে যা বর্তমান উচ্চ শিক্ষায় ৫টি বিশেষ দিকের উপর দৃষ্টিপাত করে। ডিজিটাল রুপান্তর, গবেষণা ও উদ্ভাবন, গুণমান নিশ্চিতকরণ, যোগাযোগ ও দেশ অধ্যায়ের উপর আলোকপাত করে। এই সংস্থার নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি প্রকাশনা, শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক অলিম্পিয়াড, গবেষণা তহবিল ও বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
মহামারি পরবর্তী সময়ে ঢাকায় আয়োজিত এই ১৫তম সম্মেলনে শিক্ষানেতারা তথ্য প্রযুক্তি ও মানসম্পন্ন শিক্ষার মধ্যে সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে আলোচনা করবেন। এছাড়া অন্যান্য আরো ৬টি বিষয়ের উপর এই আলোচনা দৃষ্টিপাত করবে।
বিষয়গুলো হলো- করোনা পরবর্তীতে কর্মসংস্থানের জন্য অনলাইন থেকে মিশ্র শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্ভাবন, কর্মসংস্থানের ভিত্তিতে ফলাফল নির্ভর শিক্ষার জন্য পরীক্ষামূলক ও ব্যবহারিক শিক্ষার প্রচলন, প্রকল্পভিত্তিক শিক্ষা গ্রহণ ও শিক্ষা প্রদান, উদ্ভাবন- ইনকিউবেশন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন, আন্তজাতিক সহযোগিতা ও গতিশীলতা এবং অনুষদের উন্নয়ন ও গবেষণা। এই আলোচনার বিষয় সমূহ দুই বছর করোনা মহামারির পরবর্তী সময়ে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে উদ্বেগের এবং সমাধানের ক্ষেত্রে পূর্ণতা আনবে আশা করা যাচ্ছে।