চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) অনলাইনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া মহোদয়।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। সভাপতিত্ব করেন ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুল আলম।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন ডীনদের পক্ষে পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ আজাদ হোসেন, প্রভোস্টগণের পক্ষে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোছাঃ ফারজানা রহমান জুথী, চুয়েট শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার দেব, চুয়েট কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম, চুয়েট স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে বক্তব্য রাখেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ও চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তানভীর আহমেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চুয়েটের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। শুরুতে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ক্বারী নুরুল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ্য ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলা। এই সুখী দেশ গড়ে তুলতে যেমন প্রয়োজন অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি অর্জন করা তেমনি জরুরি একটি দক্ষ জনগোষ্ঠী ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। এজন্য আমাদের খুব করে প্রয়োজন একটি জ্ঞানভিত্তিক বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা, যেখানে থাকবে জ্ঞানের বিকাশ ও চর্চার জন্য যথোপযুক্ত বৈষম্যমুক্ত পরিবেশ। জ্ঞানকে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো সক্ষমতা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে এ ব্যাপারে খুব বেশি উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আজকের নতুন প্রজন্মের মধ্যে আগামী দিনের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট শক্তি ও সৎ সাহস আছে। বিগত বৈষম্য বিরোধী সফল আন্দোলনে আমরা তা দেখতে পেয়েছি। একটি সুখী-সমৃদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে যার যার অবস্থান থেকে আত্মনিয়োগ করতে হবে জ্ঞানভিত্তিক বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনকেই প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য করতে হবে নতুন প্রজন্মকে। তবেই আমাদের সেই সুখী, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এবং তা স্থায়িত্ব পাবে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের অনুভূতি বা মেধাশক্তিকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব হলেই মানুষের জ্ঞানরাজ্যের দিগন্ত বিস্তৃত হতে পারে। টেকসই উন্নয়নে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে সবার জন্য সুশিক্ষার বিকল্প নেই। বিশ্বের মানচিত্রে একটি সুশিক্ষিত ও উন্নত জাতি হিসেবে সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে হবে। প্রতিটি নাগরিককে একজন সুনাগরিক এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি নাগরিককেই সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে, জ্ঞানভিত্তিক আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে। আমি মনে করি, ক্ষমতাভিত্তিক নীতি ও জনপ্রিয়তাভিত্তিক সমাজব্যবস্থা ছেড়ে দ্রুত যত গবেষণাভিত্তিক নীতি ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থার দিকে যাব, তত দ্রুতই আমাদের উন্নয়নটা টেকসই হবে, আমাদের দেশ প্রকৃতপক্ষে বিজয়ী হবে।”